জেল যাত্রা বড় জ্বালা। বড়ই দুর্বিষহ। জেল ফেরত আসামী হাড়ে হাড়ে জানে সে জ্বালা কী মারাত্মক। আর সে কারণেই এবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন মদন মিত্র। কারণ সেই জেলের গরাদের পিছনে থাকার ভয় তাঁকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সারদা কাণ্ডের জেরে দীর্ঘ কয়েক মাস জেলে কাটাতে হয়েছে মদন মিত্রকে। সেই সারদাকাণ্ডের চূড়ান্ত চার্জশিট ডিসেম্বরেই জমা দিতে চলেছে সিবিআই। সূত্রের খবর সেই চার্জশিটে নাম রয়েছে মদন মিত্রের। তৃণমূলের এই "প্রভাবশালী" নেতা আর জেলে থাকতে চাইছেন না। সম্প্রতি তাঁর সাগরেদ বিশ্বজয় মজুমদার তোলাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। সেও এখন পুলিশের গারদে। জেলে পচা যে কী মারাত্মক হয় তা ভালোভাবেই জানেন মদন মিত্র। সে কারণেই জেলে যাওয়ার ভয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাওয়া শ্রেয় মনে করেছেন তিনি। সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোরের বাড়বাড়ন্ত সহ্য করতে পারেননি শুভেন্দু। সে কারণেই মান-সম্মান নিয়ে টানাটানির চাইতে মানে মানে কেটে পড়াই ভালো মনে করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। মদন মিত্রের ক্ষেত্রে যদিও বিষয়টি উল্টো। মান-সম্মান তাঁর আগেই গেছে। দু-কান কাটা বললেও কম বলা হয়। কার্যত তাঁর পরিচয় এখন জেল ফেরত আসামি। জেল থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকে অবশ্য তৃতৃণমূল নেতার সেই গ্ল্যামার ধরে রাখতে পারেননি মদন মিত্র। কার্যত ছাগলের তিন নম্বর সন্তান হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অনেক কষ্টে যাও ভাটপাড়া উপনির্বাচনের টিকিট পেয়েছিলেন তাও সেখানে জামানত খুইয়ে এসেছিলেন। আসলে জেল খেটে আসার পর থেকে স্যোশাল মিডিয়ায় নিজেকে কমেডিয়ান করে ফেলেছেন মদন। যদিও "দাদার অনুগামী"রা বলেন, এটা একরকম ইচ্ছে করেই করেছিলেন। যাতে সিবিআইয়ের নজর এড়িয়ে চলা যায়। সুতরাাং মান বা সম্মান তাঁর নেই। কিন্তু যা আছে তা হল ভয়। আর সেই ভয়েই সে এখন তৃণমূলের বিরোধী। সেই ভয় জেলে যাওয়ার ভয়।
অনিরুদ্ধ মজুমদার
0 Comments